আমরা দূরত্ব শব্দটির সাথে খুব ভালোভাবে পরিচিত, তবে সরণ (displacement) শব্দটি দৈনন্দিন কথাবার্তায় সেভাবে ব্যবহার করি না। আমরা একটি উদাহরণ দিয়ে দূরত্ব এবং সরল শব্দ দুটির মাঝে সম্পর্কটি বোঝার চেষ্টা করি। 2.01 চিত্রে একটি আঁকাবাঁকা রাস্তা দেখানো হয়েছে। এই রাস্তাটিতে A বিন্দুর সাপেক্ষে রাস্তার অতিক্রান্ত দূরত্বগুলো কিলোমিটারে 1, 2, 3 সংখ্যা দিয়ে দেখানো হয়েছে।
ধরা যাক তুমি A বিন্দুতে আছ, (অর্থাৎ তোমার অবস্থান A বিন্দু) এখন তুমি সাইকেল চালিয়ে আঁকাবাঁকা পথটি ধরে 4 km রাস্তা অতিক্রম করে B বিন্দুতে পৌঁছেছ। আমরা বলতে পারব A এবং B বিন্দুর ভেতরকার দূরত্ব 4 km । দুরত্ব একটি স্কেলার রাশি, কাজেই A এবং B বিন্দুর ভেতরকার দূরত্ব বোঝানোর জন্য কোনো দিকের কথা বলে দিতে হবে না।
চিত্র 2.01: A বিন্দু থেকে শুরু করে আঁকাবাঁকা পথে সাইকেল যাওয়া
A বিন্দুর সাপেক্ষে B বিন্দুর "সরণ" বের করতে আমরা A বিন্দুর সাপেক্ষে এই পথটি ধরে B বিন্দুর দূরত্ব” বের করেছি। এখন ইচ্ছে করলে পারি। সরণ বলতে বোঝানো হয় A বিষ্ণুর অবস্থানের সাপেক্ষে B বিন্দুর অবস্থান। ছবিতে A বিন্দু থেকে B বিন্দু পর্যন্ত একটা তীর চিহ্নিত সরলরেখা দিয়ে সরণটি দেখানো হয়েছে। এই ছবিতে সরণের মান 3 km এবং তীরের দিকটি হচ্ছে সরণের দিক। অর্থাৎ সরণ হচ্ছে ভেক্টর রাশি, এর মান এবং দিক দুটিই আছে।
যদি তুমি সাইকেল দিয়ে আরো দুই কিলোমিটার অতিক্রম করে মোট হয় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে C বিন্দুতে পৌঁছাও তোমার সরণ হবে তীর চিহ্নিত সরলরেখা AC, যার মান 1.5 কিলোমিটার এবং এখানেও তীরের দিকটি তোমার সরণের দিক। যদিও তুমি আঁকাবাঁকা পথ ধরে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছ কিন্তু সরণ হয়েছে কমা অর্থাৎ বেশি দূরত্ব অতিক্রম করলেই বেশি সরণ হবে সেটি সত্যি নয়। শুরু থেকে শেষ অবস্থানের পার্থক্য হচ্ছে সরণ।
A থেকে শুরু করে আঁকাবাঁকা পথে B পর্যন্ত দূরত্ব 4 km ঠিক একইভাবে B থেকে A পর্যন্ত হচ্ছে 4 km, দুটোই সমান। কিন্তু লক্ষ করে দেখো A থেকে B পর্যন্ত সরণ আর B থেকে A পর্যন্ত সরণ কিন্তু সমান নয়। একটি আরেকটির নিগেটিভ বা ঋণাত্মক। ভেক্টর হিসেবে লিখতে পারি :
দূরত্ব কিংবা সরণ, দুটোর মাত্রাই হলো দৈর্ঘ্যের মাত্রা।
[সরণ] = L (ভেক্টর )
[দূরত্ব] = L (স্কেলার )
common.read_more